মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৭:১৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কলকাতায় চার হাজার ঢাকায় ৭০৯ কর্মী

কলকাতায় চার হাজার ঢাকায় ৭০৯ কর্মী

ডেঙ্গু সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লেও রাজধানী ঢাকায় এর প্রকোপ বেশি। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এডিস মশাবাহী ভাইরাসে। তিলধারণের ঠাঁই নেই হাসপাতালগুলোতে। এমন অবস্থায় রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র বিভিন্ন আলাপচারিতায় ভারতের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের কথা বলছেন। উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র (ডিএনসিসি) আতিকুল ইসলাম ইতোমধ্যে কথা বলেছেন কলকাতা পৌর সংস্থার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের সঙ্গে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী সংকটে ভুগছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কলকাতা পৌর সংস্থার অধিভুক্ত ২০৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় মশক নিধনের জন্য কাজ করছেন ৪ হাজার ৩১৩ জন কর্মী। এর বিপরীতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনে কাজ করছেন মাত্র ৭০৯ জন কর্মী।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি) রয়েছে ১২৯টি ওয়ার্ড। প্রতি ওয়ার্ডে মশক নিয়ন্ত্রণে কর্মী মাত্র ৪/৫ জন। রয়েছে ওষুধ ও সরঞ্জাম সংকটও। ফলে কোনো কোনো ওয়ার্ডে সপ্তাহে একবারও ওষুধ ছিটানো সম্ভব হয় না। আবার নতুন যুক্ত হওয়া ৩৬টি ওয়ার্ডে মশক নিধনের জন্য কোনো বরাদ্দই নেই। অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের পুরনো অরগানোগ্রামেই চলছে বিভক্ত সিটি দুটি। এ ছাড়া দুই সংস্থার আয়তন দ্বিগুণ হলেও জনবল নেমেছে অর্ধেকে। পুরনোরা অবসরে গেলেও নতুন করে যোগ হচ্ছে না কোনো কর্মী।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের কর্মী ও কর্মকর্তা সংকট এড়াতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ৭৫ কর্মকর্তাকে ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ সেল’-এর কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জানা গেছে, মশা নিধন কাজে কলকাতা পৌর সংস্থায় একজন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা; ৬ জন উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা; একজন প্রধান কীট নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা; ১৬ জন আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা; একজন সমন্বয়কারী (স্বাস্থ্য); একজন মিউনিসিপ্যাল সার্ভিলেন্স অফিসার; ২৬৪ জন ওয়ার্ড মেডিক্যাল অফিসার; ৩ জন কীটতত্ত্ব পরিদর্শক; ১৯ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক রয়েছেন। এ ছাড়া তদারককারী ২৬২ জন; বহুমুখী স্বাস্থ্য সহকারী ৯০ জন; ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান ১৮৬ জন; ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্যকর্মী ৪৫ জন; অবৈতনিক স্বাস্থ্যকর্মী ২৮০ জন; মাঠকর্মী ১ হাজার ৬৯৮ জন এবং তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ কর্মকা-ের জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ১ হাজার ৪৪০ জন (১০০ দিনের কর্মসূচি) রয়েছে। সব মিলিয়ে সংস্থাটিতে ৪ হাজার ৩১৩ জন জনবল রয়েছে। সংস্থাটি কয়েক স্তরে সারাবছরই ডেঙ্গু বিষয়ে নজরদারি চালায়। কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ২০ থেকে ২৫ জন করে কর্মী রয়েছে। এর পাশাপাশি ১৬টি অঞ্চলের জন্য একটি করে র‌্যাপিড অ্যাকশন টিম রয়েছে।

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) মশক নিয়ন্ত্রণসহ স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয় দেখভালের জন্য একজন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়েছেন। আঞ্চলিক বা সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়েছেন ৪ জন। স্বাস্থ্য পরিদর্শক রয়েছেন ৫ জন। মাঠকর্মী রয়েছেন ৪২৯ জন। সব মিলিয়ে সংস্থাটিতে জনবল মাত্র ৪৩৯ জন।

আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) একজন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়েছেন। এ ছাড়া আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ৪ জন ও সমন্বয়কারী (স্বাস্থ্য) একজন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৯ জন ও মাঠকর্মী রয়েছেন ২৮০ জন। সব মিলিয়ে সংস্থাটিতে জনবল মাত্র ২৯৫ জন।

যদিও উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুই সিটি করপোরেশনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে এক মাসের জন্য মাস্টাররোলে ১৬শ কর্মী নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুু মোকাবিলায় বছরব্যাপী কাজ করতে হবে। এক মাস কার্যক্রম চালালে কিছুই হবে না। এ জন্য স্থায়ী জনবল দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির শীর্ষ কর্মকর্তাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি এগুলো কাটিয়ে উঠতে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাস্টাররোলে কর্মী নিয়োগ অনুমোদনও দিয়েছে। তবে স্থায়ী জনবলের বিষয়ে অগ্রগতি নেই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877